স্বরূপকাঠী ॥ কি হচ্ছে সরকারি হাসপাতালে ? বাংলাদেশের প্রতিটি সরকারী হাসপাতালে এক ধরনের হরিলুটে পরিনত হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। দুদকের অভিযান হলেও থামতেছেনা চরম দুর্নীতি। অথচ বর্তমান সরকার সাধ্যমত সুবিধা দিয়ে যাচ্ছে। এতকিছু দেওয়া সত্বেও উপজেলা থেকে জেলা আর জেলা থেকে বিভাগীয় হাসপাতালে চরম অনিয়মের বাসা বেঁধেছে। আর সেই সুত্র ধরে বাদ যাচ্ছেন না নেছারাবাদ উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। আসলে এ হাসপাতালে কর্তা আছেন কিন্তু কেহই নির্দেশ মানেন না বলে সাধারন রোগীরা গণমাধ্যম কর্মীদের জানান। যার যার খেয়াল খুশি মতন কাজ করে যাচ্ছে।
গত এক বছরের সরকারি নিয়মের নির্দেশের মধ্যে চলার রেকর্ড হয়তো কাররই নাই। অথচ বেসরকারী স্বরূপকাঠী পৌরসভার নাম মাত্র ক্লিনিকে রোগী পাঠানো থেকে শুরু করে ডেলিভারী সহ নানান অপারেশনে ঠিক ঠিক দায়িত্ব পালনে সদা ব্যাস্ত ডাঃ আসাদ। আর এদিকে অর্থের লোভে নীতিভ্রষ্ঠ হয়ে সরকারি দায়িত্বে চরম অবহেলা করে যাচ্ছে। উদাহরন স্বরূপ যে ডোলিভারী সরকারি হাসপাতালে হওয়া সম্ভব কিন্তু হচ্ছে না। অর্থের কারনে স্বরূপকাঠী বন্দরের স্বরূপ ডায়াগনস্টিক সেন্টারে টেষ্ট রিপের্ট বা এ্যাপেক্স ক্লিনিকে ডেলিভারীতে মুহুর্তের মধ্যে চলে যায়। বিচিত্র সেলুকাসের মাধ্যমে বিচিত্র কমিশন বানিজ্য। সরেজমিনে দেখা গেছে, নিদৃষ্ট সময়ের মধ্যে দু একজন বাদে সরকারি হাসপাতালে সকলেই দায়িত্বে চরম অবহেলা করে আসছে। এ ব্যাপারে একাধীক রোগীরা অভিযোগের তীর ডাঃ আসাদের বিরুদ্ধে। নিদৃস্ট সময়ে অফিসে না আসার অবহেলা তো রয়েছেই। তাছাড়া সরকারি নির্দেশ মানা হচ্ছেনা রোগীদের ফী’র ব্যাপারে। পাশাপাশি সকল রোগীদের রিপোর্ট স্বরূপ ডায়াগনেস্টিকে পাঠানো হচ্ছে। রোগীরা অন্য ক্লিনিকে যেতে চাইলে বলেন, রোগীদের উল্টো প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে বলেন ডাক্তার আমি না আপনি। ধমকের মধ্যে বলেন, আমি যা বলি তা শুনবেন। আর এক রোগী মাদ্রার বাসিন্দা মিনতি মিস্ত্রী বলেন, আমি আমার মেয়ের রিপোর্ট নিয়ে ডাঃ আসাদ স্যারের হাতে দেই। উনি অন্য প্রতিষ্ঠানের নাম দেখার সাথে সাথে আমার উপর রিপোর্ট ছুড়ে মারে। প্রতিবাদ করায় আমাকে বের হয়ে যেতে বলেন। আরও বলেন স্বরূপে গিয়ে নুতন করে রিপোর্ট নিয়ে আসেন। সরেজমিনে আরও দেখা যায়, নার্সদ্বয়েরা রোগীদের সাথে কি ধরনের কর্কশ ভাষা ব্যবহার করেন। গত এক মাসের মধ্যে কোন ডাক্তারই যথাযথ দায়িত্ব পালন করেননি। সরেজমিনে আরও সুস্পস্ট হয় যে, নেছারাবাদ হাসপাতালে গুটি কয়েক এম আর দালালে সয়লাব। ডাক্তার আসাদের আশেপাশে নামসর্বম্ব কিছু কোম্পানীর এম আর দালালরা ডিউটির পুরো সময়টাই এদের দখলে থাকে। এ কারনে সাধারন রোগীরা প্রকৃত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। হাসপাতালের দরজা থেকে শুরু করে ডাক্তার আসাদের চেম্বারে অবস্থান নেয় নামসর্বস্ব ঐসব কোম্পানীর এম আররা। আবার রাত্র দ্বিপ্রহরে এহেনও দালালরা ঘোরাফেরা করে থাকে সিজার বানিজ্যের জন্য। আবার কেহ কেহ ক্ষমতার দাপটে হাসপাতালকে নিজের পৈত্রিক সম্পত্তি মনে করেন। রোগীরা একান্ত সমস্যার কথাও বলতে পারেন না বহিরাগত দালালদের কারনে। অপরদিকে সিজার বানিজ্যে নাম্বার ওয়ানে ডাঃ আসাদ। এলাকার সন্তান বিধায় ভাবটাই একটু আলাদা। তার জন্মস্থান বানারীপাড়া হওয়ায় এই হাসপাতালটাকে নিজের ইচ্ছে মত চালানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে সুকৌশলে। রিপোর্ট বানিজ্যসহ সিজার বানিজ্য একক ভাবে শীর্ষে রয়েছে ডাঃ আসাদ। এদিকে এত কিছু অনিয়ম করলেও কোন জবাবদিহিতা না থাকায় রাম রাজত্ব কায়েম করে যাচ্ছেন তিনি। এ ব্যাপারে নেচারাবাদ হাসপাতালের প্রধান ডাঃ তানভীরের সাথে কথা হয় মোবাইলে। উনিও যথা সময়ে হাসপালে আসার রেকর্ড কম। তাকে না পেয়ে ফোনে কথা হয়। তিনি অকপটে স্বীকার করেন আসলে আমাদের দায়িত্বে অবহেলা রয়েছে কম বেশী। আমি সকল ডাক্তারকে অনুরোধ করেছি। আপনারা যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করেন। এদিকে ডাঃ আসাদের বিষয়ে কথা হয় নানান অনিয়মের বিষয়ে। ডাঃ আসাদ এর নানা দুর্ণীতি ও অনিয়ম সম্পর্কে হাসপাতাল প্রধান কোন প্রশ্নের সঠিক জবাব দিতে পারেন নাই। তিনি বলেন, কোন চিকিৎসক নিজ থেকে দায়িত্ব পালন না করলে তাকে চাপ দিয়ে করানো যায় না। তিনি আশ্বস্ত করে বলেন, সাধারন মানুষের চিকিৎসা সেবায় আমি আমার অবস্থান থেকে সাধ্য মত চেষ্টা করে যাব। আমি সকলকেই যথাযথ দায়িত্ব পালনের জন্য নির্দেশ প্রদান করবো। এদিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে আলাপ হয় হাসপাতালের অনিয়মের বিষয়ে। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমি আপনাদের কথা শুনেছি। আমি সকল বিষয়ে জেনে শুনে সঠিক ভাবে দেখার আশ্বাস দেন। কোন চিকিৎসকের ত্রুটি বা অবহেলা ধরা পড়লে আইনানু ব্যবস্থা গ্রহন করার কথা জানান।
Leave a Reply